বাংলাদেশ ও চীন সেমিকন্ডাক্টর খাতে সহযোগিতা জোরদার করার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছে। রবিবার ঢাকায় আয়োজিত এক আনুষ্ঠানিক অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (বিএসআইএ) এবং হুবেই সেমিকন্ডাক্টর ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশন (এইচএসআইএ)-এর মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। বিএসআইএ সভাপতি এম এ জব্বার এবং এইচএসআইএ-এর সহ-সভাপতি প্রফেসর ওয়েই লিউ নিজ নিজ সংগঠনের পক্ষে এই সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
এই সমঝোতা স্মারকের অধীনে, বিশেষ করে জ্ঞান ও উন্নত প্রযুক্তি বিনিময়, যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রশিক্ষণ ও সার্টিফিকেশন প্রোগ্রাম, দ্বি-পাক্ষিক বিনিয়োগ ও ব্যবসায়িক অংশীদারিত্ব, যৌথ ইভেন্ট, বাণিজ্য প্রতিনিধিদল ও এক্সপো আয়োজনের ক্ষেত্রে দুই অ্যাসোসিয়েশন একসাথে কাজ করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে।
এই সহযোগিতা বাংলাদেশের সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেমের বৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করবে, বৈশ্বিক প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা বৃদ্ধি করবে এবং নবতর উদ্ভাবন ও সহযোগিতার সুযোগ সৃষ্টি করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে এইচএসআইএ-এর সহ-সভাপতি ও উহান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটস-এর একাডেমিক কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ওয়েই লিউ বলেন, উহানকে বলা হয় চীনের অপটিক্যাল ভ্যালি’ যেখানে শত শত অপটিক্যাল যোগাযোগ ও সেমিকন্ডাক্টর কোম্পানি রয়েছে। ৬০টিরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রায় ১৩ লক্ষ শিক্ষার্থী নিয়ে উহান প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের একটি শক্তিশালী কেন্দ্র। বাংলাদেশের রয়েছে বিপুল মেধাবী জনশক্তি, যা শুধু প্রযুক্তি বিনিময় নয় বরং প্রকৌশলী প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা-গবেষণা সহযোগিতায় অসাধারণ সম্ভাবনা তৈরি করবে। এইচএসআইএ-এর অধীনে প্রায় ৫০০টি সেমিকন্ডাক্টর সদস্য কোম্পানি রয়েছে, যার মধ্যে কিছু কোম্পানিকে আমরা বাংলাদেশে নিয়ে এসে যৌথ উদ্যোগ, প্রযুক্তি স্থানান্তর ও সক্ষমতা বৃদ্ধি কর্মসূচিতে যুক্ত করতে চাই।
বিএসআইএ-এর সভাপতি এম এ জব্বার এই সহযোগিতা নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,
আজকের এই কর্মসূচি আমাদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক। এই সমঝোতা স্মারক বাংলাদেশের ও চীনের মধ্যে ব্যবসায়িক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার পাশাপাশি একাডেমিক বিনিময় এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির নতুন দ্বার উন্মুক্ত করবে। এটি বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর ভ্যালু চেইনে আমাদের অগ্রযাত্রাকে ত্বরান্বিত করবে।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএসআইএ অ্যাডভাইজরি প্যানেলের সদস্য ও নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রোকনুজ্জামান, বুয়েটের অধ্যাপক ড. এএসএমএ হাছিব, সিনিয়র অ্যাডভাইজার এনায়েতুর রহমান, সিনিয়র বিএসআইএ-র পরিচালক কামরুল আহসান দেওয়ানজি, আলিয়া শফকাত, আশিকুর রহমান তানিম, তাফুরি টেকনোলজিস লিমিটেড এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাখাওয়াত হোসেন, সিলিকোনোভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সিরাজুল আলম খান, প্রাইম সিলিকনের প্রধান কারিগরি কর্মকর্তা তারেক খান প্রমুখ।
এই সহযোগিতা বাংলাদেশকে বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর ইকোসিস্টেমে প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান অর্জনের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত করবে। প্রফেসর ওয়েই লিউ সম্পর্কে আরও জানতে ভিজিট করুন: https://jszy.whu.edu.cn/liuwei2/en/index.htm