Monday, June 16, 2025
spot_img
Homeইভেন্টমাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠিত

বাংলাদেশের প্রথম গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়েছে। গতকাল (২২ এপ্রিল) ঢাকায় এক অনুষ্ঠানে মাতারবাড়ী বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে বন্দর নির্মাণ চুক্তি স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে এ যাত্রা শুরু হয়। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (সিপিএ) এবং জাপানের দুটি শীর্ষস্থানীয় নির্মাণ প্রতিষ্ঠান পেন্টা-ওশেন কনস্ট্রাকশন কোম্পানি লিমিটেড ও টিওএ কর্পোরেশনের যৌথ উদ্যোগের মধ্যে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। 

চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন; নৌবাহিনী প্রধান এডমিরাল এম নাজমুল হাসান; নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মোহাম্মদ ইউসুফ; চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এস এম মনিরুজ্জামান; বাংলাদেশে জাপান দূতাবাসের উপ-মিশন প্রধান নাওকি তাকাহাশি এবং জাইকা বাংলাদেশ অফিসের প্রধান প্রতিনিধি তোমোহিদে ইচিগুচি।

মাতারবাড়ি বন্দর উন্নয়ন প্রকল্পটি জাপান ইন্টারন্যাশনাল কোঅপারেশন এজেন্সি (জাইকা)-এর আর্থিক সহায়তায় (ঋণ) সরকারি উন্নয়ন সহায়তা (ওডিএ) কর্মসূচির আওতায় বাস্তবায়িত হচ্ছে। এই প্রকল্পে অর্থায়নের পাশাপাশি, জাইকা প্রকল্পটির নকশা, পরিবেশগত দিকসমূহ এবং পরিচালন দক্ষতা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী নিশ্চিত করতে কারিগরি সহায়তাও প্রদান করছে।

মহেশখালী-মাতারবাড়ী ইন্টেগ্রেটেড ইনফ্রাস্ট্রাকচার ডেভেলপমেন্ট ইনিশিয়েটিভের (এমআইডিআই) মূল প্রকল্প মাতারবাড়ী বন্দর, যা বাংলাদেশ ও জাপান সরকারের যৌথ উদ্যোগে চলমান বিস্তৃত উন্নয়নের অংশ। এ উদ্যোগের লক্ষ্য একীভূত লজিসটিকস, জ্বালানি ও শিল্পোন্নয়ন সংযুক্ত করার মাধ্যমে মহেশখালী-মাতারবাড়ী অঞ্চলকে একটি কৌশলগত অর্থনৈতিক করিডোরে পরিণত করা। মাতারবাড়ী বন্দর চালু হলে এটি আশেপাশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের উন্নয়নে সহায়ক হবে, বৈদেশিক প্রত্যক্ষ বিনিয়োগ আকর্ষণ করবে এবং স্থানীয় কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করবে।

প্রকল্পের বৃহত্তর পর্যায়ের অংশ হিসেবে, মাতারবাড়ী বন্দরকে ১ নং জাতীয় মহাসড়কের সাথে যুক্ত করবে এমন ২৭ কিলোমিটার দীর্ঘ সংযোগ সড়ক নির্মাণ এবং চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়া পর্যন্ত বিদ্যমান মহাসড়কের বেশকিছু সংকীর্ণ অংশের উন্নয়নে সহায়তা করছে জাইকা। বন্দর থেকে দেশের গুরুত্বপূর্ণ শিল্প ও বাণিজ্যিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে মালামাল স্থানান্তরকে সহজ করার ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্ন ও বহুমুখী লজিকটিকস পদ্ধতি নিশ্চিত করতে হলে এ উন্নয়ন অত্যন্ত জরুরি।

এ বিষয়ে জাইকা বাংলাদেশের প্রধান প্রতিনিধি তোমোহিদে ইচিগুচি বলেন, “এটি কেবল একটি চুক্তি স্বাক্ষর নয়, এর মাধ্যমে একটি রূপান্তরমুখী যাত্রার শুরু হলো। মাতারবাড়ী বন্দর বাংলাদেশে একটি নতুন সামুদ্রিক দ্বার হিসেবে কাজ করবে এবং দীর্ঘমেয়াদে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে। আমরা এই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রকল্পে সহায়তা করতে পেরে উচ্ছ্বসিত; যা বাংলাদেশ ও জাপানের অংশীদারিত্বের সক্ষমতা ও গভীরতাকেই প্রতিফলিত করে।”

মাতারবাড়ী বন্দরের কাজ শেষ হওয়ার পর এটি বৃহৎ আকারের কনটেইনার জাহাজগুলোকে ধারণ করতে সক্ষম হবে; ফলে, বর্তমানে এই অঞ্চলের ট্রান্সশিপমেন্ট বন্দরগুলোর ওপর নির্ভরশীলতা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে আসবে। এতে করে পরিবহনের সময় বাঁচবে, আমদানিকারক ও রপ্তানিকারকদের জন্য খরচ কমবে এবং বাণিজ্যপথগুলোর নির্ভরযোগ্যতা বৃদ্ধি পাবে; যা বাংলাদেশকে বিশ্ববাণিজ্যে প্রতিযোগিতা ও বিনিয়োগ আকর্ষণ করার ক্ষেত্রে সহায়তা করবে।

spot_img
আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বাাধিক পঠিত

spot_img