সম্প্রতি (১-২ মার্চ) দুবাইয়ে ব্রিটিশ কাউন্সিলের বার্ষিক ‘স্কুলস নাও’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এতে সারা বিশ্বের ব্রিটিশ কাউন্সিলের পার্টনার স্কুলগুলো থেকে শিক্ষাবিদ ও বিশেষজ্ঞরা অংশগ্রহণ করে আন্তর্জাতিক শিক্ষা ব্যবস্থায় কী ধরনের উদ্ভাবন ও পরিবর্তন আসছে সে বিষয়ে আলোকপাত করেন।
এ বছরের থিম ছিল ‘ট্রান্সফরমিং স্কুলস: লিডারশিপ অ্যাট অল লেভেলস’। মূল বক্তব্য, প্যানেল আলোচনা ও কর্মশালার মাধ্যমে স্কুল কমিউনিটি কীভাবে ভালো নেতৃত্বের উদাহরণ তৈরি করতে পারে সে বিষয়ে আলোচনা করা হয়। উপস্থিত প্রতিনিধিরা শিক্ষার্থীদের মধ্যে নেতৃত্ব বিকাশের গুরুত্ব সম্পর্কে জানতে পারেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের এডুকেশন সার্ভিসেসের গ্লোবাল হেড ডগলাস উডস একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতি তৈরি করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন, যা নেতৃত্বের ও প্রতিভার বিকাশ ঘটাতে সহায়ক হবে। মহামারী পরবর্তী সময়ের বাস্তবতায় স্কুলগুলোর জন্য এখন অতীতের যে কোনও সময়ের চেয়ে নেতৃত্ব বিকাশ কেন বেশি জরুরি সে বিষয়ের ওপর জোর দেন তিনি।
এই সম্মেলন একটি হাইব্রিড ইভেন্ট ছিল, যেখানে সারা বিশ্ব থেকে সরাসরি ৩০০ জন এবং ভার্চুয়ালি প্রায় আরও ১৫০০ জন অংশগ্রহণ করেন। এই ইভেন্টে বিভিন্ন অঞ্চল ও সংস্কৃতি থেকে আসা অংশগ্রহণকারীরা তাদের ভিন্নধর্মী ধারণা, অন্তর্দৃষ্টি এবং সর্বোত্তম রীতি (প্র্যাকটিস) সবার সামনে উপস্থাপন করেন। এই সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন সংযুক্ত আরব আমিরাতে নিযুক্ত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত প্যাট্রিক মুডি।
পাকিস্তান, মিশর, জর্ডান, নাইজেরিয়া, পেরু, স্পেন ও যুক্তরাজ্য থেকে আগত অতিথিরা তাদের মূল্যবান মতামত প্রকাশ করেন।
শায়ারল্যান্ড কলেজিয়েট একাডেমি ট্রাস্টের সিইও স্যার মার্ক গ্র্যান্ডি মূল বক্তব্য প্রদান করেন। তিনি তার বক্তব্যে তরুণ শিক্ষার্থীদের সাফল্য নিশ্চিত করতে সেরা কর্মীদের ধরে রাখার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে কথা বলেন। ব্রিটিশ ইউনিভার্সিটি ইন দুবাইয়ের (বিইউআইডি) শিক্ষা অনুষদের ডিন ও স্পেশাল অ্যান্ড ইনক্লুসিভ এডুকেশনের শিক্ষক প্রফেসর ইমান গাদ শিক্ষা ব্যবস্থায় অন্তর্ভুক্তিমূলক সংস্কৃতি তৈরি করার জন্য নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে তার মতামত ব্যক্ত করেন।
ব্রিটিশ কাউন্সিলের গ্লোবাল হেড অফ স্কুল এক্সাম সাইমন হিগিন্স বলেন, “‘লিডারশিপ অ্যাট অল লেভেলস’ থিম নিয়ে এই বছর আমরা মহামারী পরবর্তী বিশ্বে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নেতারা যে ধরনের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে এবং নেতৃত্বের বিকাশের মাধ্যমে কীভাবে কর্মী, শিক্ষার্থী ও বৃহত্তর কমিউনিটিকে সহায়তা করা যাবে সেসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছি।”
ব্রিটিশ কাউন্সিল বাংলাদেশের ডিরেক্টর টম মিসিওসিয়া বলেন, “বাংলাদেশে আমরা একটি বৃহৎ পার্টনার স্কুল নেটওয়ার্কের সাথে কাজ করি, যার মধ্যে দেশের ৯টি জেলার ১৬৮টি পার্টনার স্কুল রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্য হলো যুক্তরাজ্যর সহায়তায় এই পার্টনার স্কুলগুলোকে সার্বিক সহযোগিতা প্রদান এবং বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মকে তাদের স্বপ্ন পূরণে সাহায্য করা।”
ব্রিটিশ কাউন্সিল পার্টনার স্কুল বিশ্বব্যাপী ২ হাজারেও বেশি স্কুল ও ১ লাখের বেশি শিক্ষককে সহায়তা প্রদান করে এবং প্রায় এক মিলিয়ন শিক্ষার্থীর জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে কাজ করে যাচ্ছে। এই গ্লোবাল ইভেন্টে বাংলাদেশ, আমেরিকা, ইউরোপ সাব-সাহারান আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা, দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়া থেকে প্রতিনিধিরা অংশগ্রহণ করেন।