সাইবার পরিসরে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বেগ ক্রমেই বেড়ে চলেছে। তাই, এ বিষয়ে গুরুত্বারোপ করতে ‘এনাবলিং সিকিউরিটি টু সেফগার্ড আওয়ার ডিজিটাল প্রেজেন্স’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠান আয়োজন করেছে গ্রামীণফোন। এ অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে ‘সিকিউরিটি ডে’ পালন করল প্রতিষ্ঠানটি।
অনুষ্ঠানের মূল আয়োজনে ছিল অংশগ্রহণমূলক প্যানেল আলোচনা। এ প্যানেল আলোচনায় পাঁচজন আলোচক অংশগ্রহণ করেন। তাদের আলোচনায় উঠে আসে সচেতন হওয়ার বিষয়টি। ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে ইন্টারনেটের অসীম জগতে প্রতিবার ক্লিক কিংবা ট্যাপ করার সময় সবার কেনো সতর্ক হওয়া উচিত, প্যানেল আলোচনায় আলোচকরা এ নিয়ে বিশদ আলোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের কর্মকর্তাদের মধ্যে প্যানেলে আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান, সিসিএও হ্যান্স মার্টিন হেনরিক্সন, হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট ফারহানা ইসলাম এবং হেড অব হেলথ, সেফটি, সিকিউরিটি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট এএসএম হেদায়াতুল হক। আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করে নিজের গুরুত্বপূর্ণ মতামত ব্যক্ত করেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের জাতীয় ডেটা সেন্টারের পরিচালক তারেক এম. বরকতউল্লাহ। প্যানেল আলোচনাটি সঞ্চালনা করেন গ্রামীণফোনের বিজনেস সিকিউরিটি অফিসার রুনে ইয়েলসেং। রাজধানীর জিপিহাউজে আজ (৭ ফেব্রুয়ারি) অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়, যেখানে অনলাইন পরিসরে নিরাপত্তা বিষয়ে বিস্তারিত আলোকপাত করা হয়।
মূল আলোচ্য বিষয় ‘এনাবলিং সিকিউরিটি টু সেফগার্ড আওয়ার ডিজিটাল প্রেজেন্স’ ঘিরেই আলোচনাটি অনুষ্ঠিত হয়। ডিজিটাল জীবনে ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ও সুরক্ষা কী – এ প্রশ্নের মাধ্যমে আলোচনা শুরু হয়। ডেটা ও ইউজার আইডেন্টিটির সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা করার সময় ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক আবু সাঈদ মো. কামরুজ্জামান এ প্রশ্নের উত্তর দেন। এ সময় তিনি ব্যক্তিগত তথ্যে অননুমোদিত বা অবৈধ উপায়ে প্রবেশ করার ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উল্লেখ করেন। একইসাথে, তিনি সবার জন্য নিরাপদ ডিজিটাল অভিজ্ঞতা ও পরিবেশ নিশ্চিত করা কতোটা গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে তার মতামত ব্যক্ত করেন। এক্ষেত্রে সরকার যে সক্রিয়ভাবে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, এ বিষয়ে আলোকপাত করেন তিনি। আলোচনায় তিনি জানান, কমবয়স্ক ও তরুণ ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের অনিরাপদ কনটেন্ট থেকে দূরে রাখতে ইতোমধ্যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সরকার, যার মধ্যে রয়েছে অনিরাপদ কনটেন্টসহ ক্ষতিকর সাইট ব্লক করে দেয়া। পাশাপাশি, ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের জন্য ডেটা নিরাপত্তা নিশ্চিতেও সরকার কাজ করছে বলে জানান তিনি। আলোচনায় গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “ইন্টারনেটে সবার জন্য বিস্তৃত সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। ডিজিটালভাবে দক্ষ হয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারলে এটি আমাদের জন্য সম্ভাবনার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে। তবে, একইসাথে, এখানে নানান ধরনের ঝুঁকিও রয়েছে। দায়িত্বশীল বিজনেস সিটিজেন ও শীর্ষস্থানীয় কানেক্টিভিটি সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান হিসেবে সকলের জন্য নিরাপদ ডিজিটাল স্পেস তৈরি করা গ্রামীণফোনের প্রধান অগ্রাধিকার এবং আমরা আমাদের গ্রাহকদের জন্য প্রাইভেসি ও ডেটার নিরাপত্তা বজায় রাখতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। কিন্তু কোনো অপারেটরের একার পক্ষে এ বিশাল কাজ সম্পাদন করা সম্ভব না। তাই, সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি কমিয়ে আনতে আমাদের সরকার ও অন্যান্য পার্টনারদের সাথে একযোগে কাজ করতে হবে। সেই সাথে, আমরা নিজস্ব সক্ষমতা বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসচেতনতা তৈরি, কর্মীদের প্রশিক্ষণ, প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ, গ্লোবাল এক্সপার্টদের সাথে পার্টনারশিপ করার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এআই-নির্ভর প্রোডাক্টিভিটির নতুন এই সময়ে ডিজিটাল প্রেজেন্সের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে হলে আমাদের প্রয়োজন হবে ভবিষ্যতের জন্য উপযোগী আইন ও সক্ষমতা।