Friday, March 29, 2024
spot_img
Homeটেক শিক্ষকগণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

গণমাধ্যমকর্মীদের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয় প্রশিক্ষণ সম্পন্ন

ডিজিটাল পরিমণ্ডলে জনসাধারণের নিরাপদ অভিজ্ঞতা নিশ্চিতের লক্ষ্যে বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে দেশব্যাপী বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ইমেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এরই আলোকে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) এর অধীনে উক্ত প্রকল্পের আওতায় ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার ও ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সীর উদ্যোগে গতকাল ৩১ শে অক্টোবর ২০২২ সোমবার রাজধানী ঢাকার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি দিনব্যাপী প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়।

টেকনোলজি মিডিয়া গিল্ড বাংলাদেশ (টিএমজিবি) এর সহায়তায় গণমাধ্যমকর্মীদের ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়ক দিনব্যাপী এই প্রশিক্ষণটিতে দেশের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যমের ৫০ জন গণমাধ্যমকর্মী প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন।

প্রশিক্ষণ কার্যক্রমে উদ্বোধকের বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম পিএএ। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার, টিএমজিবি সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন এবং সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ। অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ খায়রুল আমীন। বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ইমেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান উক্ত অনুষ্ঠানে শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব এন এম জিয়াউল আলম বলেন, সারা বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশেও সাইবার অ্যাটাক বাড়ছে। আমরা সতর্ক হচ্ছি ঠিকই, তবে সেটি আরও বাড়াতে হবে। তবেই সাইবার হামলা মোকাবিলা করা যাবে। তিনি বলেন, এখন তরুণ-তরুণীদের সাইবার জগতে সতর্ক ও সচেতন হতে হবে বেশি। তাছাড়া সাইবার জগতে বড় ধরনের অঘটন ঘটতে পারে, তাই আমাদের সবার সম্মিলিত সহযোগিতার মাধ্যমে তা মোকাবিলা করতে হবে।

তিনি বলেন যে সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রথম ডিজিটাল সিকিউরিটি কাউন্সিলের সভা করেছেন এবং সেখানে এ বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়েছে। আমরা কিভাবে মোকাবিলা করবো, কিভাবে সমন্বিত উদ্যোগ দরকার সে বিষয়েও আলোচনা হয়েছে উক্ত সভায়। এছাড়া, কালিয়াকৈরে একটা ডিজিটাল সিকিউরিটি এজেন্সীর এর কার্যালয় হবে সেখানে কিভাবে কাজ করা হবে সে বিষয়েও প্রাধান্য পেয়েছে আলোচনায়। তিনি বলেন, একটা সমন্বিত ফোর্স বা শক্তি তৈরি করা যারা এই সাইবার জগতকে নিরাপদ রাখতে কাজ করবে সে বিষয়ে নির্দেশনাগুলো আমরা ইতোমধ্যে পেয়ে গিয়েছি। আমরা পর্যায়ক্রমে সেগুলো বাস্তবায়ন করছি।

সিনিয়র সচিব আরো বলেন, আমাদের ডিজিটাল ডিভাইসগুলোও এখন নিরাপদ নয়। সব সময় সাইবার অপরাধীরা ওঁত পেতে থাকে। এমন আয়োজনের মাধ্যমে সমন্বিত উদ্যোগ নিয়ে আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশকে নিরাপদ করতে পারবো বলে আমার বিশ্বাস।

বিসিসি’র নির্বাহী পরিচালক রণজিৎ কুমার বলেন, সারা বিশ্বে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র সাইবার নিরাপত্তার মাধ্যমেই কেউ ইন্টারনেটে বাইরের হুমকি থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারে। তিনি বলেন যে সকলের সাবধানতা এবং সচেতনতাই পারে নিরাপদ সাইবার পরিবেশ তৈরী করতে। এই কারণেই আমাদের সাইবার নিরাপত্তার ব্যাপারে সচেতন হওয়া দরকার।

অনুষ্ঠানটিতে সভাপতিত্ব করেন ডিজিটাল নিরাপত্তা এজেন্সির মহাপরিচালক ও অতিরিক্ত সচিব মোঃ খায়রুল আমীন। তিনি বলেন যে অর্থনৈতিক-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রযুক্তি ব্যবহারে ত্বরিত সুফল পাচ্ছে। তিনি বলেন তথ্যপ্রযুক্তির এই ক্রমবর্ধমান উন্নতি, প্রচার, প্রসার ও ব্যবহারের যুগে মানুষের কাছে বিভিন্ন ধরণের তথ্য এবং সেবা পৌছে দেওয়ার সহজ মাধ্যম হচ্ছে ইন্টারনেট। এর নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং নিরাপদে ব্যবহার করা অতি জরুরী।

টিএমজিবি সভাপতি মোহাম্মদ কাওছার উদ্দীন বলেন সংবাদকর্মীদের জন্য ডিজিটাল লিটারেসি ও সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন যে বর্তমান সময়ের তথ্য প্রযুক্তির বিপ্লব আমাদের জীবনকে এতোটাই প্রভাবিত করেছে যে, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, অর্থনীতি, যোগাযোগ ব্যবস্থাসহ দৈনন্দিন জীবনের প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার প্রয়োগ ঘটেছে। এই সকল প্রযুক্তি ও তার ব্যবহার প্রতিদিনই উন্নত হচ্ছে। তাই এর সাথে তাল মিলিয়ে ডিজিটাল নিরাপত্তার বিষয়টিতে গুরুত্ব রাখতে হবে।

সবশেষে তিনি বলেন আমরা প্রত্যাশা করি, তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রযাত্রায় এই প্রশিক্ষণের উদ্যোগের মাধ্যমে সাংবাদিকরা নিজেদেরকে অনলাইনে নিরাপদ রাখার পাশাপাশি তাদের সংবাদের মাধ্যমে দেশের জনগণকে অনলাইনে নিরাপদ রাখতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারবে।

টিএমজিবির সাধারণ সম্পাদক মুরসালিন হক জুনায়েদ বলেন, সংবাদকর্মীদের জন্য এমন আয়োজন করায় আইসিটি বিভাগকে ধন্যবাদ। আমি মনে করি, এমন আয়োজনের মাধ্যমে সাইবার নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দেয়া সম্ভব হবে।

প্রকল্প পরিচালক মোহাম্মদ সাইফুল আলম খান বলেন ইন্টারনেট এবং প্রযুক্তি আমাদের জন্য প্রতিদিনের একটি প্রয়োজনীয় বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তাই ডিজিটাল শিক্ষা এবং সাইবার নিরাপত্তা বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন সকলের জন্য প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে ডিজিটাল লিটারেসি বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেন বাংলাদেশ সরকারের জন্য নিরাপদ ইমেইল ও ডিজিটাল লিটারেসি সেন্টার স্থাপন প্রকল্পের পরামর্শক জহিরুল ইসলাম খান। এই প্রশিক্ষণে অংশ নেয়ার মাধ্যমে গণমাধ্যমকর্মীরা সাইবার নিরাপত্তা, সাইবার বুলিং, গুজব, অনলাইন প্রাইভেসি, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্ট ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান অর্জনে সক্ষম হন এবং বাস্তব জীবনে এই জ্ঞানের প্রয়োগের মাধ্যমে ডিজিটাল জগতকে আরও নিরাপদ করে তুলতে পারবেন। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহণকারী গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশিক্ষণ শেষে ডিজিটাল লিটারেসি সার্টিফিকেট প্রদান করা হয়।

spot_img
আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বাাধিক পঠিত

spot_img