ডিজিটাল ধারাকে রূপান্তরের লক্ষ্যে দেশের প্রথম ক্রস-প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ মার্কেটপ্লেস “অ্যাপসিটি” নিয়ে এলো শীর্ষস্থানীয় টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান গ্রামীণফোন। উদ্ভাবনী প্রযুক্তি, স্মার্ট সল্যুশন এবং সংযুক্ত থাকার সুবিধা নিয়ে এই প্ল্যাটফর্মটি অ্যাপ ডেভেলপার এবং পাবলিশার উভয়কে বিটুবি ও বিটুসি গ্রাহকের সাথে সংযুক্ত করে যা ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’গড়ার পথকে সুগম করবে।
ঢাকার একটি হোটেলে এই অ্যাপ মার্কেটপ্লেসটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের চেয়ারম্যান ও টেলিনর এশিয়ার প্রধান পেটার-বরে ফারবার্গ, গ্রামীণফোনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ইয়াসির আজমানসহ প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
গ্রামীণফোনের টেলকো-টেক যাত্রার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, অ্যাপ মার্কেটপ্লেস “অ্যাপসিটি” একটি ইউনিফাইড প্ল্যাটফর্ম যা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ্লিকেশন এবং সফ্টওয়্যার এজ এ সার্ভিস (SaaS) সলিউশনস নিয়ে আসবে। অ্যাপ স্টোর এবং এপিআই হাব উভয় প্ল্যাটফর্মে কার্যকর এই মার্কেটপ্লেসটি কনটেন্ট সরবরাহকারী এবং অ্যাপ্লিকেশন ডেভেলপার উভয়কে ব্যক্তি ও কর্পোরেট গ্রাহকদের সাথে সংযুক্ত করে। অ্যাপসিটি-এর একটি অনন্য বৈশিষ্ট্য হলো এতে বিল্ট-ইন অ্যান্ড্রয়েড, আইওএস, এবং টেলকো এপিআই সুবিধা রয়েছে, যা বিটুবি ও বিটুসি উভয় প্ল্যাটফর্মে কার্যকর। এই বৈশিষ্ট এটিকে বাংলাদেশের প্রথম ক্রস-প্ল্যাটফর্ম অ্যাপ মার্কেটপ্লেসে পরিণত করেছে। এই উন্নয়নটি নন-কোডারদের অ্যাপ ডেভেলপমেন্টে নিয়োজিত হওয়ার ক্ষেত্রে নতুন পথ উন্মোচন করবে, যা সহজ অ্যাপ তৈরির জন্য প্ল্যাটফর্মের নির্দেশিত ইউ আই এর সাথে সমন্বয় করা যা বিদ্যমান কিছু বিখ্যাত প্ল্যাটফর্মের সাথে তুলনীয়।
দেশের প্রথম সমন্বিত বিটুবি অ্যাপ মার্কেটপ্লেসের দাবিদারও এই প্ল্যাটফর্মটি। ব্যবহারকারীদের রেটিংয়ের পাশাপাশি কিউরেটেড এক্সপার্ট রেটিংও চালু করেছে ’অ্যাপসিটি, যা প্রচলিত অ্যাপ মার্কেটপ্লেস থেকে আলাদা। টেলকো বিলিং এবং প্রচলিত অর্থ পরিশোধ প্রক্রিয়ার পাশাপাশি ব্যবহারকারীদের সুবিধার কথা বিবেচনা করে মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসের (এমএফএস) সুবিধাও যুক্ত করেছে প্ল্যাটফর্মটি। অন্যান্য অ্যাপ মার্কেটপ্লেসের তুলনায় প্ল্যাটফর্মটিতে রয়েছে বিস্তৃত পেমেন্ট চ্যানেল সুবিধা।
ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি উদ্ভাবনে গ্রামীণফোনের অগ্রণী ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, ”আমাদের জাতীয় লক্ষ্যের সাথে সামঞ্জস্য রেখে স্মার্ট জাতির জন্য একটি স্মার্ট ভবিষ্যত নিশ্চিত করতে ’অ্যাপসিটি’ বিশেষ ভূমিকা রাখবে। উদ্ভাবনের পাশাপাশি “স্মার্ট বাংলাদেশ” গড়তে তরুণ উদ্যোক্তাদের সক্রিয় ভূমিকা রাখার সুযোগ তৈরি হয়েছে।“ তরুণদের সম্পৃক্ত করতে প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, “অ্যাপসিটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য এবং
বাংলাদেশের জনগণই এটি গড়ে তুলবে। একটি স্মার্ট জাতি গড়ার লক্ষ্যে অ্যাপসিটি’র জন্য আয়োজিত হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের জন্য আমি সবাইকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি।“
গ্রামীণফোনের চেয়ারম্যান ও টেলিনর এশিয়ার প্রধান পেটার-বরে ফারবার্গ বলেন, ”গ্রামীণফোন ’অ্যাপসিটি’ গড়ে তোলায় আমরা অত্যন্ত আনন্দিত। এটি শুধু ডেভেলপারদেরই ক্ষমতায়ন করবেনা, পাশাপাশি সমৃদ্ধ গ্রাহক অভিজ্ঞতার অগ্রগতিতেও ভূমিকা রাখবে। “স্মার্ট বাংলাদেশ” এর প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতির সাথে সামঞ্জস্য রেখে, এই ইন্ডাস্ট্রি-ফার্স্ট উদ্যোগটি দেশের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি এবং ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখার জন্য আমাদের চলমান প্রচেষ্টাকে প্রতিফলিত করে।”
গ্রামীণফোনের চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার (সিইও) ইয়াসির আজমান বলেন, “’অ্যাপসিটি’ এর মাধ্যমে আমরা আরও সংযুক্ত এবং স্মার্ট ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করছি। এই প্ল্যাটফর্মটি একটি স্মার্ট, অন্তর্ভুক্তিমূলক, নিরাপদ, এবং টেকসই ইকোসিস্টেম তৈরি করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণ করে। শুধু প্রথাগত টেলিযোগাযোগ সেবা প্রদান নয়, আমাদের উদ্দেশ্য মানুষেকে সংযোগের আওতায় এনে সমাজের ক্ষমতায়ন এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। গ্রামীণফোন অত্যাধুনিক আইসিটি এবং আইওটি সমাধানগুলি অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তার পোর্টফোলিওকে ঢেলে সাজিয়েছে, যাতে একটি আন্তঃসংযুক্ত বিশ্বের গতিশীল চাহিদা পূরণে আমরা এগিয়ে থাকি।”
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোনের উদ্ভাবনী সেবার বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন প্রতিষ্ঠানটির শীর্ষ কর্মকর্তারা। পণ্যের সহজীকরণ এবং গ্রাহক অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেন চিফ মার্কেটিং অফিসার মোহাম্মদ সাজ্জাদ হাসিব। জিপিফাই-এর মতো স্মার্টহোম সল্যুশন নিয়ে আলোচনা করেন চিফ ডিজিটাল অফিসার সোলায়মান আলম। চিফ বিজনেস অফিসার ড. আসিফ নাইমুর রশিদ আলো’র স্মার্টলাইফ সম্পর্কে কথা বলেন যা পরবর্তী প্রজন্মের উদ্ভাবনী আইওটি প্রোডাক্ট লাইন ও অ্যাপ।