তারুণ্যের প্রাণবন্ত প্রদর্শনী এবং ঐতিহ্যের বাহারি আয়োজনের মধ্য দিয়ে জেসিআই কার্নিভাল এবং কার্যনির্বাহী কমিটি ২০২৪ এর অভিষেক অনুষ্ঠিত হয়েছে। জুনিয়র চেম্বার ইন্টারন্যাশনাল (জেসিআই) বাংলাদেশ কর্তৃক আয়োজিত “কার্নিভাল” একটি বাৎসরিক বিশেষ অনুষ্ঠান। বাংলাদেশের জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ যেহেতু তরুণ তাই জেসিআই বাংলাদেশ মনে করে সমাজ তথা দেশের শক্তিশালী পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই তরুণদের প্রতিশ্রুতি ও উদ্যমই যথেষ্ট।
জেসিআই বাংলাদেশের ৪০টি লোকাল চ্যাপ্টারের ৬ হাজারেরও বেশি সদস্য, পরিবারবর্গ ও অতিথিদের সমাগম ঘটে রাজধানীর মাদানী রোডের গ্রিন ভিল আউটডোর প্রাঙ্গণে। দিনব্যাপী মিলেনমেলায় গত কয়েক বছরের ধারাবাহিকতায় এবারো নানা আয়োজনে মাতেন উপস্থিত সবাই। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী খাবার “মেজবান” পরিবেশন করা হয়। জেসিআই সদস্যগণ ও তার পরিবার বিভিন্ন আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিভিন্ন পেশাজীবি মানুষদের সাথে সামাজিক সংযোগ স্থাপনের সুযোগ পান। ছোট্টমনিদের জন্য ছিল বিভিন্ন গেইম রাইড, পুতুল নাচ ও পিঠা-পুলির আয়োজন।
অনুষ্ঠানটি সভাপতিত্ব করেন জেসিআই বাংলাদেশ এর ২০২৪ ন্যাশনাল প্রেসিডেন্ট ইমরান কাদির। তিনি কার্নিভাল অনুষ্ঠানের তাৎপর্য এবং সদস্যদের জীবনে এর পরিবর্তনমূলক প্রভাব ও গুরুত্ব তুলে ধরেন। তিনি তরুণদের বহুমুখী উন্নয়ন এবং এই ধরনের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে দক্ষ নেতা তৈরিতে সংগঠনের অঙ্গীকারের উপর জোর দেন। সভাপতি ইমরান কাদির বলেন, “জেসিআই বাংলাদেশ তার ব্র্যান্ডকে উন্নত করার লক্ষ্যে সমাজের তরুণ ও সচেতন নাগরিকদের জন্য নেতৃস্থানীয় একটি বিশেষ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলেছে। আমাদের লক্ষ্য নেতৃত্বের বিকাশ ও তরুণদের ক্ষমতায়ন করা যার দ্বারা বিভিন্ন প্রভাবশালী সামাজিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের মাঝে ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসা যায়।”
অনুষ্ঠানের বিশেষ অংশে ছিল ২০২৪ জাতীয় কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠান, যেখানে জাতীয় নির্বাহী কমিটির প্রত্যেক সদস্যকে একটি জমকালো অনুষ্ঠানে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। জনপ্রিয় ব্যান্ড মাইলসের পরিবেশনার মধ্য দিয়ে শেষ হয় দিনব্যাপী অনুষ্ঠানটি। অনুষ্ঠানটি এসোসিয়েট পার্টনার ছিল টগি ফান ওয়ার্ল্ড, গোল্ড পার্টনার যমুনা ইলেকট্রনিক্স ও অটোমোবাইলস লিমেটেড ও কাজী প্রিন্টিং একসেসরিজ লিমিটেড।
জেসিআই বাংলাদেশের ন্যাশনাল ট্রেজারার কাজী ফাহাদ ইভেন্ট ডিরেক্টর, ন্যাশনাল সেক্রেটারি জেনারেল ফাহিম আহমেদ, সহ-আহ্বায়ক হিসেবে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের দায়িত্ব পালন করেন। কাজী ফাহাদ বলেন, “এই ধরনের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে, জেসিআই বাংলাদেশ সমমনা সংগঠনগুলোর সাথে সহযোগিতা বৃদ্ধিকরে, তরুণদের ক্ষমতায়ন বৃদ্ধির মাধ্যমে সচেতন নাগরিকদের একটি বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে চায়।“
জেসিআই বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সেক্রটারী জেনারেল নিয়াজ মোর্শেদ এলিট জেসিআই বাংলাদেশকে দেশের সর্ববৃহৎ তরুণ সংগঠন হিসেবে বর্ণনা করে সংগঠনটির বৃদ্ধি ও সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।
জেসিআই বাংলাদেশ কার্নিভাল এবং ২০২৪ ন্যাশনাল কমিটি অভিষেক অনুষ্ঠান শুধুমাত্র তরুণদের প্রাণচাঞ্চল্যই উদযাপন করেনি বরং নতুন কমিটির অধীনে নেতৃত্ব গঠন ও উন্নয়নের জন্য একটি বিশেষ প্ল্যাটফর্ম তৈরি করেছে এক বছরের জন্য। একটি মানসম্পন্ন সমাজ গড়ার অঙ্গীকার নিয়ে জেসিআই বাংলাদেশ তরুণদের ক্ষমতায়ন এবং বাংলাদেশের একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যত গঠনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। ২০২৪ সালে জেসিআই বাংলাদেশ তরুণদের ক্ষমতায়ন, নেটওয়ার্কিং এবং প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে গুরুত্ব দিবে। বিভিন্ন উদ্ভাবনী কার্যক্রমের মাধ্যমে সামাজিক পরিবর্তন সঞ্চালন করবে। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) এর সাথে সামঞ্জস্য রেখে সামাজিক সমস্যা মোকাবেলার জন্য এই উদ্যোগগুলি বিশেষভাবে নকশা করা হয়েছে, যা একটি স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্পে অবদান রাখবে।
অনুষ্ঠানটির সিলভার স্পন্সর কিউকম, সিবিসি টাইলস, আনোয়ার গ্রুপ, সিটি ব্যাংক, মিতসুবিসি মটরস, আরএকে সিরামিকস, রংপুর রাইডার্স, রিয়েলস্টার প্রোপারটিজ, প্রভাতি ইনসুরেন্স কোম্পানি লিমিটেড, মোকাম, কার্নিভাল ইন্টারনেট, আরআর ক্যাবল, ইনডেট গ্রুপ, বিএনও লুব্রিকেন্ট ও রান লেদার।
১৯১৫ সালে প্রতিষ্ঠিত জেসিআই ১৮ থেকে ৪০ বছর বয়সী তরুণ নাগরিকদের সমন্বয়ে গড়া আন্তর্জাতিক সংগঠন। জেসিআই প্রায় ১২৪ টি দেশে কার্যক্রম বিস্তৃত করেছে। কাউন্সিল অব ইউরোপ এবং ইউনেস্কোর মতো গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির সাথে একটি মর্যাদাপূর্ণ পরামর্শমূলক প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করছে। মানসম্মত সমাজ গড়ার লক্ষ্যে বাংলাদেশে বিশেষ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে জেসিআই বাংলাদেশ।