ডিজিটাল বাংলাদেশের বেশিরভাগ কাজ এখন বাসায় বসে বা অনলাইনে করা যাচ্ছে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট, অনলাইনে সরকারি সেবা এবং চিকিৎসাক্ষেত্রে টেলিমেডিসিন সেবা দেশের নাগরিক জীবনের মানকে পরিবর্তন করে দিয়েছে। ভবিষ্যতের নাগরিক জীবন হবে পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি অগ্রগামী ভূমিকা রাখবে।
গতকাল মঙ্গলবার খুলনা প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) খুলনা শাখা আয়োজিত ‘স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ খুলনা’ উদ্বোধনকালে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতি (বিসিএস) এর সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত সরকার।
তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ মানেই হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে সুশাসন, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা , কার্যকর গণতন্ত্র, জনগণের ক্ষমতায়ন ও সাফল্য। তথ্যপ্রযুক্তির উন্নতিতে রাজধানী আর খুলনায় কোন পার্থক্য নেই। বর্তমান সরকারের অন্যতম অবদান, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মাসেতু স্থাপন করে সরকার বুঝিয়ে দিলো ২০৪১ সালে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার যে পরিকল্পনা রয়েছে তা বাস্তবায়ন হবেই। ডিজিটাল বাংলাদেশে বিসিএস যেমন পথিকৃৎ ছিল স্মার্ট বাংলাদেশের বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেও বিসিএস তৎপর। প্রথমবারের মতো বিসিএস খুলনাতে স্মার্ট বাংলাদেশ এক্সপোর আয়োজন করেছে। ধারাবাহিকভাবে এই আয়োজন বিসিএস এর ১০টি শাখাসহ সারাদেশে এবং বিসিএস এর তিন হাজারের বেশি সদস্যের মাধ্যমে দেশ ও বিদেশে এর প্রচারণা অব্যাহত থাকবে।
সুব্রত সরকার বলেন, যত বেশি তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত মেলা হবে, ততবেশি খুলনার জনগণ প্রযুক্তি বান্ধব হবে। স্মার্ট বাংলাদেশ এক্সপোতে মানুষ নিত্যনতুন প্রযুক্তি সম্পর্কে জানতে পারে। প্রযুক্তি পণ্য কেনার ক্ষেত্রেও মিলে নানাবিধ ছাড়। ডিজিটাল ডিভাইস ছাড়া প্রযুক্তির সুফল ভোগ করা অসম্ভব।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিসিএস সহ-সভাপতি রাশেদ আলী ভূইয়া। তিনি বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে আজ একটি স্মরণীয় দিন। ডিজিটাল বাংলাদেশের সফল অভিযাত্রা শেষ করে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের অগ্রযাত্রায় যুক্ত হয়েছি। জননেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অফ থিংস, ভার্চুয়াল রিয়েলিটি, অগমেন্টেড রিয়েলিটি, রোবোটিকস ও বিগ ডেটার মতো ডিজিটাল প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিতের মাধ্যমে সরকার বাংলাদেশকে অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ করতে চায়। আমরা সেই সমৃদ্ধির যাত্রার অগ্রপথিক। আমরা বিশ্বাস করি তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি ছাড়া কোন জাতি এখন আর পৃথিবীর নেতৃত্বে আসতে পারবে না।
স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ খুলনা এর কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী বিসিএস মহাসচিব কামরুজ্জামান ভূইয়া বলেন, ২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ২০২১ সালের মধ্যেই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, তা এখন দৃশ্যমান। এই ডিজিটাল বাংলাদেশই বদলে দিয়েছে দেশের উন্নয়ন অগ্রগতির গতিপথ। ২০৪১ সাল সামনে রেখে এখন নতুন চ্যালেঞ্জ স্মার্ট বাংলাদেশ। এই স্মার্ট বাংলাদেশ সহজ করবে মানুষের জীবন যাত্রা, হাতের মুঠোয় থাকবে সব কিছু। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধুকন্যা। শেখ হাসিনার হাত ধরেই আসবে সেই রূপকথার মতো দেশ ‘স্মার্ট বাংলাদেশ।’
প্রদর্শনীর আহ্বায়ক ও বিসিএস খুলনা শাখার সহ-সভাপতি এস.কে শাহিদুল হক বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে। করোনা অতিমারির সংকটকালীন মুহূর্তেও ঘরে বসেই অনলাইনে নাগরিকগণ প্রায় সকল ধরনের সেবা পেয়েছেন, যা ডিজিটাল বাংলাদেশরই সুফল। প্রথমবারের মতো খুলনাতে এই আয়োজন করতে পেরে আমরা গর্বিত।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিসিএস কোষাধ্যক্ষ মো. নজরুল ইসলাম হেলালী, খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস.এম নজরুল ইসলাম, বিসিএস খুলনা শাখার সভাপতি মুন্সী আরিফুজ্জামান, সেক্রেটারি আহমেদ কবির, বিসিএস এর প্রাক্তন যুগ্ম মহাসচিব এসএম ওয়াহিদুজ্জামান প্রমুখ। প্রদর্শনীতে স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ খুলনার ক্রোড়পত্র উন্মোচন করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিলের নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফয়সাল খান। প্রদর্শনীর সহযোগী আইসিটি বিজনেস প্রমোশন কাউন্সিল (আইবিপিসি)। প্লাটিনাম স্পন্সর টিপি লিঙ্ক-এক্সেল, টেন্ডা-সাউথ বাংলা কম্পিউটার্স এবং গোল্ড স্পন্সর কম্পিউটার সিটি টেকনোলজিস লিমিটেড, ডিস্ট্রিবিউশন হাব লিমিটেড, গোল্ডেন ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল বিডি., সিডনি সান ইন্টারন্যাশনাল ও ওয়ালটন।
স্মার্ট বাংলাদেশ টেক এক্সপো ২০২৩ এ প্রবেশ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে। সকাল ১০ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত এই প্রদর্শনী চালু থাকবে। মেলায় দর্শনার্থীরা বিনামূল্যে ওয়াইফাই ব্যবহার করতে পারবেন। মেলা শেষ হবে ২৫ মে।