বিশ্বের দ্রুততম চার্জিং প্রযুক্তি ৩২০ ওয়াট সুপারসনিক চার্জ নিয়ে হাজির হয়েছে জনপ্রিয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড রিয়েলমি। এই প্রযুক্তিটি এমন অভূতপূর্ব পাওয়ার, নিরাপত্তা ও দক্ষতা অর্জন করেছে, যা ‘ফাস্ট চার্জিং’কে নিয়ে এসেছে এক নতুন উচ্চতায়।
মাত্র ৪ মিনিট ৩০ সেকেন্ডে একটি স্মার্টফোন সম্পূর্ণরূপে চার্জ করতে সক্ষম এই প্রযুক্তি। মাত্র এক মিনিটে, ৩২০ ওয়াটের চার্জারটি একটি ডিভাইসকে ২৬% পর্যন্ত চার্জিং সক্ষমতা প্রদান করতে পারে এবং একটি ফোনকে ৫০% এর বেশি চার্জ করতে লাগে দুই মিনিটেরও কম সময়।
আগের বাড়তি সময় ধরে ফোন চার্জ দেওয়ার বিষয়টিকে দূরে ঠেলে দিয়ে এই প্রযুক্তি স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের জন্য চার্জিং অভিজ্ঞতাকে নতুনভাবে সংজ্ঞায়িত করে। এক কাপ কফি কিংবা একটি গান বাজাতে যে স্বল্প সময় প্রয়োজন, এর মধ্যেই ৪ মিনিটের “মিরাকেল” এর মাধ্যমে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা তাদের ডিভাইসগুলোকে সম্পূর্ণরূপে চার্জ করতে পারেন, যা “নো-ওয়েট” চার্জিংয়ের একটি নতুন যুগের সূচনা করে। হাই পাওয়ার, কম্প্যাক্ট সাইজ এবং দ্রুত চার্জিংয়ের নিশ্চিত নিরাপত্তার মধ্যে সঠিক ভারসাম্য বজায় রাখা সমগ্র স্মার্টফোন ইন্ডাস্ট্রির জন্য একটি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দুই বছরের গবেষণার পর, রিয়েলমি এখন এই সমাধান নিয়ে এসেছে।
রিয়েলমি একটি অনন্য ভাঁজ করা ব্যাটারি এনেছে, যাতে রয়েছে আকর্ষণীয় ৪৪২০ এমএএইচ চার্জিং সক্ষমতা। ফোল্ডেবল ডিভাইসের মেকানিক্স থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে এই কোয়াড-সেল ব্যাটারিকে চারটি পৃথক সেলে একত্রিত করা হয়েছে, যেগুলো একই সঙ্গে চার্জ করা যায়। প্রতিটি সেল ৩ মিমি এর কম পুরুত্বের হলেও আগের ডিজাইনের তুলনায় এর সক্ষমতা ১০% বেশি। বিশ্বের প্রথম কোয়াড-সেল স্মার্টফোনের ব্যাটারিকেও উপস্থাপন করে এটি। কেননা স্মার্টফোনে নির্বিঘেœ ফিট করে এমন একটি মসৃণ ফর্ম ফ্যাক্টর বজায় রেখে এটি দ্রুত চার্জিং সক্ষমতা তৈরি করে। প্রযুক্তিগত এই উন্নয়নের মাধ্যমে, রিয়েলমি ব্যাটারি পারফরম্যান্স এবং ফর্ম ফ্যাক্টর থেকে ব্যবহারকারীদের প্রত্যাশাকে পুনরায় সংজ্ঞায়িত করছে।
হাই-পাওয়ার চার্জিংয়ের ক্ষেত্রে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের নিরাপত্তার উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনা করে, তাদের মানসিক প্রশান্তির জন্য ইন্ডাস্ট্রির প্রথম “এয়ারগ্যাপ” ভোল্টেজ ট্রান্সফরমার চালু করেছে রিয়েলমি। এই যুগান্তকারী প্রযুক্তি স্মার্টফোনের জন্য উন্নত কন্ট্যাক্ট-ফ্রি ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক কনভার্সন ফিচার এনেছে। সার্কিট ব্রেকডাউনের মতো গুরুতর ত্রুটিতে এটি ব্যাটারি থেকে উচ্চ ভোল্টেজের বিচ্ছিন্নতা নিশ্চিত করে, যা মূলত একটি ভার্চুয়ালি ঝুঁকিমুক্ত চার্জিং লিঙ্ক তৈরি করে। পেটেন্ট করা উদ্ভাবনের একটি সিরিজ হলো আল্ট্রা-কম্প্যাক্ট ট্রান্সফর্মার, এটি একটি আঙুলের ডগা থেকেও ছোট। অসাধারণ রূপান্তর (করভার্সন) দক্ষতা এবং তাপ ব্যবস্থাপনা (থার্মাল ম্যানেজমেন্ট) বজায় রেখে ব্যাটারিকে সুরক্ষিত রাখতে এটি ভোল্টেজকে মাত্র ২০ভি-এ কমিয়ে দেয়। ফলে এটি প্রায় ৯৮% অসাধারণ পাওয়ার এফিশিয়েন্সি অর্জনের জন্য ৩২০ ওয়াটের সুপারসনিক চার্জকে সক্ষম করে তোলে।
“পকেট ক্যানন” নামে পরিচিত ৩২০ ওয়াট সুপারসনিক চার্জের চার্জারের প্রতি ঘন সেন্টিমিটারে রয়েছে ৩.৩ ওয়াটের পাওয়ার ডেনসিটি (ঘনত্ব)। এটি ২৪০ ওয়াট চার্জারের মতো একই আকার বজায় রেখে রিয়েলমি ২৪০ ওয়াটের নির্ধারিত বেঞ্চমার্ককে ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ চার্জিংয়ের বাধাগুলোকে ভেঙে ফেলতে কম্প্যাক্ট পাওয়ার হাউজটিকে এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে, যা বেশিরভাগ উন্নত মূলধারার চার্জিং প্রোটোকলকে সাপোর্ট করে। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ইউএফসিএস (৩২০ ওয়াট পর্যন্ত), পিডি ও সুপারভুক, যা সকল ডিভাইসের সঙ্গে অতুলনীয়ভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। তাই, দক্ষতা ও সুবিধার বিচারে ৩২০ ওয়াট সুপারসনিক চার্জ হলো সকলের জন্য সবচেয়ে ভালো অপশন। কেননা এতে রয়েছে দ্রুত চার্জিংয়ের জন্য ডুয়াল ইউএসবি-সি আউটপুটসমূহ (রিয়েলমি ফোনের জন্য ১৫০ ওয়াট এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ ল্যাপটপের জন্য ৬৫ ওয়াট)।
চীনের শেনঝেনে রিয়েলমি’র সদর দপ্তরে শতাধিক বৈশ্বিক গণমাধ্যম প্রতিনিধি, স্মার্টফোনপ্রেমী ও মোবাইল ইন্ডাস্ট্রি প্রফেশনাল ৪ মিনিটের “মিরাকেল’’ এর উন্মোচন স্বচক্ষে দেখেন। দ্রুত চার্জিং ছাড়াও, এআই, পারফরম্যান্স ও ইমেজিং- এই তিনটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ছয়টি নতুন প্রযুক্তি আনার মাধ্যমে রিয়েলমি গর্বের সঙ্গে ভবিষ্যত মোবাইল উন্নয়নের পথে নেতৃত্ব দেয়।