গ্রাহকদের জন্য কার্যকরী ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক ‘ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং (ডিওবি)’ পেমেন্ট সুবিধা উন্মোচন সহ ‘ডিজিবক্স’ -এর কন্ট্যাক্টলেস ডেলিভারি সুবিধা নিয়ে আসতে অ্যাসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) -এর সাথে কয়েকটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে গ্রামীণফোন।
৩৩টি সরকারি সেবার পেমেন্ট সুবিধা হিসেবে ডিরেক্ট অপারেটর বিলিং (ডিওবি) অন্তর্ভুক্ত করতে গত ১৮ ডিসেম্বর এটুআই’র সাথে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে গ্রামীণফোন। এ সুবিধা সবার জন্য দ্রুত, নিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক পেমেন্ট সেবা নিশ্চিত করবে; বিশেষ করে, গ্রাম ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের যারা ব্যাংকিং ও আর্থিক খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর সেবাখাতের বাইরে, তাদের সরকারি সুবিধাপ্রাপ্তিতে ডিওবি কার্যকরী ভূমিকা রাখবে। চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান এবং এটুআই’র হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট রেজওয়ানুল হক জামি সহ উভয় পক্ষের প্রতিনিধিবৃন্দ।
২০৪১ সালের মধ্যে ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভবিষ্যতে এ সেবা আরও বড় ও কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ খাতের ক্ষেত্রেও চালু করা হবে, যা দেশজুড়ে গ্রামীণফোনের ৮ কোটির বেশি গ্রাহকদের জন্য ডিজিটালের সম্ভাবনা উন্মোচনে ভূমিকা রাখবে। গ্রামীণফোন ও এটুআই’র মধ্যে এ পার্টনারশিপ ভবিষ্যতে উভয় পক্ষের প্রবৃদ্ধিতে ভূমিকা রাখবে এবং সমাজের ক্ষমতায়নে সহায়তা করবে। ভবিষ্যতে আরও বড় লক্ষ্য অর্জনে এটা গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
একইদিন, জিপি হাউসে ‘ডিজিবক্স’ প্লেসমেন্ট নিয়ে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর মধ্যে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে, গ্রামীণফোনের সকল কর্মীদের জন্য অনলাইনে অর্ডার করা নির্দিষ্ট বক্স নিরাপদে কন্ট্যাক্টলেস উপায়ে ডেলিভারি হবে। দারাজ থেকে অর্ডার করা পণ্য সংগ্রহ করার ক্ষেত্রে পার্সেল গ্রহণকারী তার সুবিধাজনক সময়ে ডেলিভারি এজেন্টের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ না করেও কেবল ওটিপি ভ্যারিফিকেশন ব্যবহার করে নিরাপদে তার বক্সটি গ্রহণ করতে পারবেন।
এ বিষয়ে গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী ইয়াসির আজমান বলেন, “ডিজিটাল বাংলাদেশের কানেক্টিভিটি পার্টনার হিসেবে দেশের মানুষের জীবনের রূপান্তরে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমরা নিজেদের দায়বদ্ধ মনে করি। দেশজুড়ে গ্রামীণফোন ব্যবহারকারীরা যেনো ডিজিটাল মাধ্যমের সুবিধা পরিপূর্ণভাবে ব্যবহার করতে পারেন, সেজন্য আমাদের সেবার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি-নির্ভর ধারণা ও ফিচার নিয়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে গ্রামীণফোন। ডিওবি ও ডিজিবক্সের মতো সুবিধা ভবিষ্যতে আমরা আরও নিয়ে আসবো। এবং এসব সুবিধার মাধ্যমে উন্নত জাতি হিসেবে আমরা আমাদের প্রত্যাশিত ডিজিটাল বিপ্লবের শীর্ষে অবস্থান করতে পারবো এবং সবাইকে এক্ষেত্রে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্যও অর্জিত হবে।”
এটুআই’র প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) ড. দেওয়ান মুহাম্মদ হুমায়ূন কবীর বলেন, “দেশের নাগরিকদের সেবাদানের ক্ষেত্রে এবং স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে ধারাবাহিক উদ্ভাবনকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমাদের জীবন, ভাবনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়গুলোতে অভাবনীয় পরিবর্তন এনেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। কোভিডের সময় যদি মন্ত্রণালয়, এটুআই ও টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলো একসাথে কাজ না করতো, তবে আমরা আরও দুর্বিষহ অবস্থার সম্মুখীন হতে পারতাম। গ্রামীণফোন ও এটুআই অনেকগুলো প্রকল্প নিয়ে কাজ করছে এবং এ দু’ পক্ষের অংশীদারিত্ব বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য সত্যিকারের অবদান রেখেছে। এ অংশীদারিত্বের ধারাবাহিকতায়, কার্যক্রমের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমরা গ্রামীণফোনের সাথে আমাদের অংশীদারিত্ব আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে আশাবাদী, যা নাগরিকদের সেবাদানের ক্ষেত্রে উভয় পক্ষের প্রতিশ্রুতিকে আরও জোরদার করবে।” বিগত বছরগুলোতে গ্রামীণফোন লিমিটেড ও এটুআই’র সাথে সম্পর্ক আরও জোরদার হয়েছে। গ্রামীণফোন ও এটুআই একসাথে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধিতে একসাথে কাজ করে যাচ্ছে। এর আগে, তারা ১৪টি ভিন্ন ভিন্ন খাতে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে কাজ করে, এর মধ্যে কয়েকটি যৌথ উদ্যোগ সমাজে উল্লেখযোগ্য প্রভাব রেখেছে এবং দেশজুড়ে সবার প্রশংসা পেয়েছে। বৈশ্বিক মহামারির সময়, গ্রামীণফোন ও এটুআই একসাথে ‘৬১৮ টিচারস অনারস’ উদ্যোগ গ্রহণ করে। একইসাথে, কোভিড-পরবর্তী নাগরিকদের নানা সুবিধাদানে গ্রামীণফোন স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, এটুআই, বিটিআরসি, ব্র্যাক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও ইউনিসেফের সাথে অংশীদারিত্ব করে।