Monday, November 25, 2024
spot_img
Homeবিশেষ প্রতিবেদন‘জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ গ্লোবাল ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

‘জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ গ্লোবাল ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মধ্যে ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনার লক্ষ্যে বিশ্বব্যাপী শুরু হচ্ছে #জিরো_ডিজিটাল_ডিভাইড শীর্ষক এক গ্লোবাল ক্যাম্পেইন। গতকাল শনিবার (৯ সেপ্টেম্বর) আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারের বিসিসি মিলনায়তনে এই ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক, এমপি এবং জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কান্নি উইগনারাজা। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, এসপায়ার টু ইনোভেট (এটুআই) এবং ইউএনডিপি যৌথভাবে এ প্রচারণা কার্যক্রম পরিচালনা করবে।

বিশ্বব্যাপী ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার ও তাতে অংশগ্রহণে সমতা নিশ্চিত করতে ই-কোয়ালিটি সেন্টার চালু করছে বাংলাদেশ। সেই সেন্টার প্রতিষ্ঠাকে ঘিরে ডিজিটাল বৈষম্য শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনার লক্ষ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে এই বৈশ্বিক ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে বিশ্বের পিছিয়ে পড়া দেশগুলোতে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই ডিজিটাল ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা এই ক্যাম্পেইনের লক্ষ্য।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পলক বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের সকল শ্রেণী-পেশার সমতা নিশ্চিতের জন্য সর্বদা কাজ করেছেন। তাঁর কন্যা দেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একইভাবে তার দূরদর্শী নেতৃত্বে দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের মানুষের ডিজিটাল বৈষম্য কমিয়ে আনার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করে চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি ইন্টারনেট সেবা থেকে শুরু করে সকল ডিজিটাল সেবা প্রান্তিক পর্যায়ে প্রদানের লক্ষ্যে গ্রাম থেকেই একার্যক্রম শুরু করেছিলেন। যার ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে বৈষম্য অনেক কমে গেছে। দেশের নাগরিক সেবা ডিজিটালাইজেশনের মাধ্যমে ডিজিটাল বৈষম্য কমাতে এরই মধ্যে সরকার বিভিন্ন উদ্ভাবনী প্রকল্পের উদ্যোগ নিয়েছে। যার ফলে সেবা নিতে নাগরিকদের ১৯.১ বিলিয়ন দিন সময়, ২১.৮ বিলিয়ন ডলার খরচ এবং ১২.৯ বিলিয়ন বার যাতায়াত কমেছে।

বাংলাদেশের প্রযুক্তিনির্ভর পাবলিক সার্ভিস উদ্ভাবন গ্লোবাল সাউথে অগ্রগামী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে মন্তব্য করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, বৈশ্বিক সমৃদ্ধি ও সুযোগ তৈরি হওয়ায় এবং দক্ষিণের দেশগুলোতে জ্ঞান বিতরণ ও প্রযুক্তিগত কারিগরি সহায়তা প্রদানে হাত বাড়িয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ। প্রযুক্তিগত ক্রমবর্ধমান অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে ডিজিটাল অগ্রগতিকে কার্যকরভাবে সমর্থন করেছে বাংলাদেশ। জ্ঞান সহায়তা ও উপদেশ প্রদানের মাধ্যমে বিভিন্ন স্বল্পোন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোর মধ্যে ডিজিটাল বিভাজন দূর করার লক্ষ্য নিয়ে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।

‘জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য পূরণে বাংলাদেশ এক ধাপ এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘ই-কোয়ালিটি সেন্টার তৈরির এই উদ্যোগ আরো ত্বরান্বিত করবে। স্মার্ট বাংলাদেশের যে স্বপ্ন বাংলাদেশ দেখছে তা এখন অনেকের চোখে উচ্চাভিলাষী মনে হতে পারে তবে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনী সমাধানের মাধ্যমে এই দেশ সেই অসম্ভবকে সম্ভব করে দেখাবে।

ডিজিটাল বিভাজন কমাতে বাংলাদেশ উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি দেখিয়েছে উল্লেখ করেন জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব এবং ইউএনডিপির এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের পরিচালক কান্নি উইগনারাজা। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ ঘিরে অনেক আশা রয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাংলাদেশ উল্লেখ্যযোগ্য অগ্রগতি করেছে। আমাদের এডমিনিস্ট্রেটর আকিম স্টেইনার প্রায়ই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং ইউএনডিপি-এর সাবেক এডমিনিস্ট্রেটর হেলেন ক্লার্ক কর্তৃক ২০১০ সালে চর কুকরি মুকরি থেকে সারাদেশে ডিজিটাল সেন্টার উদ্বোধন করার কথা উল্লেখ করেন। সেই ডিজিটাল সেন্টারের সংখ্যা এখন প্রায় ৯ হাজার।’

কান্নি উইগনারাজা আরও বলেন, ‘এখন, ইউএনডিপি-এর সাথে অংশীদারিত্বে, বাংলাদেশ সরকার আরও একটি সাহসী পদক্ষেপ ‘জিরো ডিজিটাল ডিভাইড’ প্রচারণার সূচনা করছে । এই উদ্যোগ শুধু স্লোগান নয়, ডিজিটাল বিপ্লবে কেউ যাতে পিছিয়ে না থাকে তা নিশ্চিত করার জন্য এটি একটি প্রতিশ্রুতি।’

এটুআই-এর প্রকল্প পরিচালক (যুগ্মসচিব) মো. মামুনুর রশীদ ভূঞার সভাপতিত্বে ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল অ্যান্ড স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের (বিআইআইএসএস) চেয়ারম্যান এ এফ এম গাউসুল আজম সরকার, এটুআই-এর পলিসি অ্যাডভাইজর আনীর চৌধুরী, জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন, উইম্যান অ্যান্ড ই-কমার্স ফোরাম (উই) এর সভাপতি নাসিমা আক্তার নিশা এবং এক্সেস বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা এবং কমনওয়েলথ ডিসএবলড পিপলস ফোরাম (সিডিপিএফ) এর আঞ্চলিক প্রতিনিধি মহুয়া পল।

ক্যাম্পেইন উদ্বোধনের সময় মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন এটুআই-এর কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস বিভাগের প্রধান পূরবী মতিন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন ইউএনডিপি বাংলাদেশের আবাসিক প্রতিনিধি স্টেফান লিলার এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এর অতিরিক্ত সচিব মোহাম্মদ নাভিদ শফিউল্লাহ। এছাড়াও অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, ইউএনডিপি এবং এটুআইসহ সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা।

spot_img
আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বাাধিক পঠিত

spot_img