জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহযোগিতায় রাজধানী ঢাকার বঙ্গবন্ধু ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স সেন্টারে তৃতীয় ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট (টিওডি) সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় । আয়োজন করে রাজউক (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ)। সেমিনারে চূড়ান্ত পর্যালোচনায় থাকা খসড়া টিওডি নীতিমালাগুলো উপস্থাপন করা হয়; যা ঢাকার ভবিষ্যৎ নগর উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক হয়ে থাকবে।
জাইকা’র চলতি টেকনিক্যাল কো-অপারেশন প্রজেক্টের আওতায় ‘দ্য প্রজেক্ট ফর ডেভেলপমেন্ট অব পলিসি অ্যান্ড গাইডলাইন্স ফর ট্রানজিট ওরিয়েন্টেড ডেভেলপমেন্ট ম্যাস ট্রানজিট করিডোরস’ শীর্ষক এই সেমিনারে প্রকল্প কার্যক্রমের অগ্রগতি ও টিওডি নীতিমালার বিষয়বস্তু উপস্থাপন করা হয়। টিওডি পদ্ধতিতে গণপরিবহনকে (পাবলিক ট্রান্সপোর্ট) কেন্দ্র করে নগর উন্নয়ন করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ মতামত তুলে ধরেন শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হামিদুর রহমান খান, রাজউকের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব) সিদ্দিকুর রহমান সরকার, ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর মোহাম্মদ আবদুর রউফ এবং জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে।
জাইকা বাংলাদেশ অফিসের চিফ রিপ্রেজেন্টেটিভ ইচিগুচি তোমোহিদে আশাবাদ ব্যক্ত করে জানান, এই টিওডি কৌশল ঢাকার মানুষের জীবনকে আরও কার্যকর ও স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক করতে গণপরিবহনের সুবিধা ও গুরুত্ব বৃদ্ধি করবে; একইসাথে, গাড়ি ও যানজট বৃদ্ধির প্রবণতার বাইরে গিয়ে সুবিশাল সম্ভাবনা হিসেবে কাজ করবে। এক্ষেত্রে তিনি সহযোগী সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতাকে অন্যতম চ্যালেঞ্জ হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও ঐক্যমত প্রতিষ্ঠার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। ঢাকার ‘ডিটেইলড এরিয়া প্ল্যান’ (ড্যাপ) ও বিভিন্ন নীতিতে টিওডি নীতিমালা অন্তর্ভুক্ত করার মাধ্যমে এর ব্যাপক ব্যবহার ও প্রয়োগ বাড়বে বলে দৃঢ় আশাবাদ জানান তিনি।
নোজোমি হিশিদার নেতৃত্বে জাইকা’র একটি বিশেষজ্ঞ দল মূল অংশীজনদের সহযোগিতায় টিওডি নীতিমালা প্রস্তুত করছে। এরমধ্যে রয়েছে- ঢাকায় টিওডির সাধারণ কাঠামো, মূল প্রক্রিয়া ও পরিকল্পনার বিষয়বস্তু এবং টিওডি বোঝার ক্ষেত্রে এর বাস্তবায়ন পদ্ধতি। এসময়, গাবতলী এলাকার জন্য আগামীর এমআরটি লাইন- ৫ ও ২ এর নির্ধারিত পরিকল্পনাসহ একটি অন্যতম পাইলট প্রকল্পের অগ্রগতি সম্পর্কে জানানো হয়। পরে সরকারি কর্মকর্তা, অ্যাকাডেমিয়া ও বেসরকারি খাতের সক্রিয় অংশগ্রহণকারীরা প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। তাদের গঠনমূলক প্রশ্ন ও আলোচনা থেকে সেমিনারে অত্যন্ত ইতিবাচক ও সহযোগিতাপূর্ণ পরিবেশ তৈরি হয়। সেমিনারে শিল্প এবং গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় সহ অন্যান্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের অংশীজন; রাজউক, ডিটিসিএ (ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ), ডিএমটিসিএল (ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেড), বিআরটিসি (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন), বিআরটিএ (বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ), ডিএমপি (ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ), ডিএনসিসি (ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন), ডিএসসিসি (ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন) সহ অন্যান্য সরকারি প্রতিষ্ঠান এবং অ্যাকাডেমিয়া ও আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীরা উপস্থিত ছিলেন। টিওডি উদ্যোগকে সফল করতে পারস্পরিক বোঝাপড়া ও সহযোগিতার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্বারোপ করতেই এই আয়োজনে অংশ নেন তারা।