বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ) এর অনুমোদন পেলো ওয়ালটন ইলেকট্রিক বাইক তাকিওন। বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো ওয়ালটনের ই-বাইককে অনুমোদন দিলো বিআরটিএ। ফলে এখন থেকে প্রচলিত গ্যাসোলিন বাইকের মতো বিআরটিএয়ের নিবন্ধন নিয়ে বাংলাদেশের রাস্তায় বৈধভাবে চলতে পারবে পরিবেশবান্ধব ওয়ালটন ই-বাইক। এই বাইকে প্রতি কিলোমিটার পাড়ি দিতে খরচ পড়বে মাত্র ১০-১৫ পয়সা।
ওয়ালটন ডিজি-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের ডেপুটি ম্যানেজিং ডিরেক্টর প্রকৌশলী লিয়াকত আলী জানান, ওয়ালটনের লোগো সম্বলিত হলেও তাকিওন (TAKYON) ব্র্যান্ড নামে ই-বাইক বাজারজাত করছেন তারা। বর্তমানে তাকিওন ১.০০ (TAKYON 1.00) মডেলের ইলেকট্রিক বাইক বাজারে ছাড়া হয়েছে। লাল, নীল এবং ধূসর রঙের সাশ্রয়ী বাইকটির দাম মাত্র ১২৭,৭৫০ টাকা। দেশের ওয়ালটন শোরুমের পাশাপাশি অনলাইনের ওয়ালটন ডিজিটেক ওয়েবসাইট (https://waltondigitech.com/products/e-bike) থেকে তাকিওন ই-বাইক কেনা যাচ্ছে।
তিনি আরো জানান, প্রচলিত গ্যাসোলিন (পেট্রোল-অকটেন চালিত) বাইকের মতো ওয়ালটনের ই-বাইক ২ কিংবা ১০ বছরের জন্য বিআরটিএয়ের নিবন্ধন করা যাবে। এক্ষেত্রে ওয়ালটন ই-বাইকের নিবন্ধন খরচ গ্যাসোলিন বাইকের চেয়েও বেশ কম।
ওয়ালটনের কম্পিউটার পণ্য এবং তাকিওন ইলেকট্রিক বাইকের প্রধান বাণিজ্যিক কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান রাদ জানান, আকর্ষণীয় ডিজাইনের তাকিওন ১.০০ মডেলের ইলেকট্রিক বাইকে রয়েছে শক্তিশালী ব্রাশলেস ডিসি মোটর, যার সর্বোচ্চ ক্ষমতা ১.৫ কিলোওয়াট। এতে ব্যবহৃত হয়েছে নতুন প্রযুক্তির গ্রাফিন বেসড ব্যাটারি, যার ধারণক্ষমতা ১.৬ কিলোওয়াট-ঘন্টা। একবার চার্জে বাইকটি ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত পথ পাড়ি দেবে। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিসীমা ঘন্টায় ৫০ কিলোমিটার।
তিনি আরো জানান, নতুন প্রযুক্তির পরিবেশবান্ধব গ্রাফিন বেসড ব্যাটারিটি ৬০০-৮০০ সাইকেল সমৃদ্ধ, যা গ্রাহক নিশ্চিন্তে ৩ বছর ব্যবহার করতে পারবেন। বাইকটিতে রয়েছে পোর্টেবল চার্জার। গৃহে ব্যবহৃত ২২০ ভোল্টের বৈদ্যুতিক লাইন থেকেই ওয়ালটনের ই-বাইকে চার্জ দেয়া যাবে। বাইকটির উভয় চাকায় ব্যবহৃত হয়েছে হাইড্রোলিক ডিস্ক ব্রেক ও টিউবলেস টায়ার। রয়েছে এলসিডি স্পিডোমিটার ও এলইডি লাইটিং।
তেলচালিত বাইকের সঙ্গে ইলেকট্রিক বাইকের পার্থক্য
– ১০০ সিসির তেলচালিত বাইক ১ লিটার তেলে সর্বোচ্চ ৫০-৬০ কিলোমিটার চলে। কিন্তু ইলেকট্রিক বাইক ১ বার চার্জে চলে ৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত।
– তেলচালিত বাইকে প্রতি কিমিতে খরচ ২ টাকা বা এর বেশি। অন্যদিকে ইলেকট্রিক বাইকে প্রতি কিমিতে খরচ মাত্র ১০-১৫ পয়সা।
– তেলচালিত বাইকে শব্দ ও পরিবেশ দূষণ হয়। কিন্তু ইলেকট্রিক বাইক শব্দ দূষণমুক্ত। গ্রাফিন বেজড ব্যাটারি ব্যবহার করায় এটি পরিবেশবান্ধব।
– তেলচালিত বাইকে নির্দিষ্ট সময় পর পর রক্ষণাবেক্ষণ খরচ প্রয়োজন হয়। অন্যদিকে ই-বাইকে তেলচালিত বাইকের তুলনায় রক্ষণাবেক্ষণ খরচ অত্যন্ত কম।
– তেলচালিত বাইকে ম্যানুয়াল ক্লাচ গিয়ার থাকায় এটি চালানো কষ্টসাধ্য। কিন্তু ই-বাইক সম্পূর্ণ অটো গিয়ার। ফলে এটি চালানো সহজ ও আনন্দদায়ক।
– প্রচলিত গ্যাসোলিন বাইক তেলের উপর নির্ভরশীল। অন্যদিকে ই-বাইক বিদ্যুতের উপর নির্ভরশীল। ঘরেও সহজেই চার্জ করা যায়।
ওয়ালটন কর্তৃপক্ষের মতে, জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার রোধের মাধ্যমে পরিবেশের সুরক্ষা এবং কম খরচে নিরাপদ যাতায়াত নিশ্চিত করতে ই-বাইক তৈরি ও বাজারজাত করছেন তারা। ওয়ালটনের নির্ধারিত সার্ভিস পয়েন্ট থেকে তাকিওন ইলেকট্রিক বাইকে ২ বছর পর্যন্ত বিনামূল্যে বিক্রয়োত্তর সেবা পাওয়া যাবে।