‘আগামী ৫ থেকে ১০ বছরের মধ্যে বিশ্ব এক আমূল পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাবে। শ্রম-নির্ভর অর্থনীতির দেশগুলো ধীরে ধীরে প্রযুক্তি-নির্ভর অর্থনীতি গঠনের দিকে ঝুঁকবে। এই পরিবর্তনের সাথে নিজেদেরকে মানিয়ে নেওয়ার জন্য আমাদের এখন থেকেই প্রস্তুতি নিতে হবে।”
সম্প্রতি গ্রামীনফোন অ্যাকাডেমি আয়োজিত মাস্টারক্লাসে অতিথি বক্তা হিসেবে উপস্থিত হন সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের (আইসিটিডি) প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি। এ অনুষ্ঠানেই জুনাইদ আহমেদ পলক এসব কথা বলেন।
সরকারের ‘ট্রিপল এ’ কৌশলের উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, “বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য দেশে উদ্ভাবন-ভিত্তিক একটি ইকোসিস্টেম গঠন করা, যেখানে নতুন উদ্যোক্তা ও উদ্যোগসমূহ বেড়ে ওঠার প্রেরণা পাবে। ইতোমধ্যে, কেবল গত ৬ বছরেই যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, সিঙ্গাপুর ও ভারতের মত দেশ থেকে বিনিয়োগকারীরা আমাদের বাজারে ৮শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি অর্থ বিনিয়োগ করেছেন। পাশাপাশি, এই খাতে সরকারেরও ৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ রয়েছে। কেননা, আগামী ১৮ বছরে আমাদের একটি জ্ঞান-ভিত্তিক অর্থনীতির পথ গড়ে তুলতে হবে, যেমনটি আমরা অতীতে সিলিকন ভ্যালিতে গড়ে উঠতে দেখেছি।”
দেশের মেধাবী তরুণদের দক্ষতার পূর্ণ বিকাশের মাধ্যমে তাদের ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করে তুলতে কাজ করছে গ্রামীণফোনের জিপি অ্যাকাডেমি প্ল্যাটফর্ম। এরই ধারাবাহিকতায়, জিপি অ্যাকাডেমির উদ্যোগে সম্প্রতি আরও একটি মাস্টারক্লাস আয়োজন করা হয়।
প্রাক-নিবন্ধনের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে ৩’শ’রও বেশি তরুণ শিক্ষার্থী জিপি অ্যাকাডেমির এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে।
বক্তব্যে জুনাইদ আহমেদ পলক উল্লেখ করেন, ১৮ বছর আগেও দেশে পর্যাপ্ত দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা ছিল না, আর দামও ছিল সাধারণের নাগালের বাইরে। কিন্তু এখন গ্রামীণফোনের মতো প্রতিষ্ঠানগুলোর সহায়তায় বর্তমানে বাংলাদেশের প্রতিটি কোনায় ছড়িয়ে পড়েছে দ্রুতগতির ইন্টারনেট সুবিধা, যার মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন দেশের ১২.৭ কোটিরও বেশি ইন্টারনেট ব্যবহারকারী।
তথ্যবহুল বক্তব্যের পাশাপাশি উপস্থিত শিক্ষার্থীদের সাথে সরাসরি কুইজ খেলার মাধ্যমে অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী আনন্দঘন সময় কাটান এবং বিজয়ীদের হাতে বিশেষ পুরস্কারও তুলে দেন। অনুষ্ঠানের শেষ পর্যায়ে একটি ৪-মিনিটের ভিডিও প্রদর্শন করা হয়, যেখানে ভবিষ্যতের স্মার্ট বাংলাদেশের সম্ভাব্য চিত্র তুলে ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন গ্রামীণফোনের প্রধান নির্বাহী, ইয়াসির আজমান নিজেও। ওই দিনের জন্য তিনি নিজেকেও একজন গর্বিত শিক্ষার্থী হিসেবে মনে করেন। ইয়াসির আজমান বলেন, “আমি মনে করি, আমারও অনেক কিছু শেখার আছে। স্মার্ট বাংলাদেশ ২০৪১ রূপকল্পের অন্যতম প্রধান নীতিনির্ধারক মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এমপি’র কাছে থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ ধারণা নিয়ে সরাসরি জানতে পারা আমাদের সবার জন্য এক অনন্য সুযোগ।” তিনি আরও বলেন, “বর্তমানে আমাদের নিজেদের ওপর বিনিয়োগ করা জরুরী, যাতে আগামীতে আমরা নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে পারি। ভবিষ্যৎ উপযোগী বিষয়ে অগ্রাধিকার দেয়ার এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা উন্মোচনের “এখনই সময়”। শিখতে ও নিজেদের বিকাশে আমাদের মনকে উন্মুক্ত করতে হবে। কেননা, আমাদের আজকের স্বপ্নের ওপরেই নির্ভর করছে আমাদের আগামীর অর্জন।”
অনুষ্ঠানে গ্রামীণফোন থেকে আরও উপস্থিত ছিলেন হোসেন সাদাত, সিনিয়র ডিরেক্টর, কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স; ফারহানা ইসলাম, হেড অব সোশ্যাল ইমপ্যাক্ট, ফারহানা হোসেন শাম্মু, প্রোগ্রাম ম্যানেজার এবং প্রতিষ্ঠানটির অন্যান্য ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।