Wednesday, October 30, 2024
spot_img
Homeইভেন্টহুয়াওয়ের ২৫ বছরের গৌরবময় পথচলা

হুয়াওয়ের ২৫ বছরের গৌরবময় পথচলা

বাংলাদেশে ২৫ বছরের যাত্রা সম্পন্ন করেছে হুয়াওয়ে। প্রতিষ্ঠানটি দেশের পরবর্তী রূপকল্প বাস্তবায়নে বাংলাদেশের পাশে থেকে কাজ করতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। গতকাল সন্ধ্যায় ঢাকায় অনুষ্ঠিত হুয়াওয়ে বাংলাদেশের ২৫ বছর পূর্তি উদযাপন অনুষ্ঠানে এ ঘোষণা দেয়া হয়।

অনুষ্ঠানে আইসিটি অবকাঠামো ও স্মার্ট ডিভাইস প্রদানকারী বিশ্বের নেতৃস্থানীয় এই প্রতিষ্ঠানটি এর সকল সহযোগী, গ্রাহক ও এই খাতের স্টেকহোল্ডারদের অপরিসীম সহযোগিতা, বিশ্বাস ও নির্দেশনার জন্য তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন। এই মনোভাবের সাথে মিলে রেখে অনুষ্ঠানের নামকরণ করা হয় ‘২৫ ইয়ারস অব টুগেদারনেস, জার্নি অব ট্রাস্ট, সাপোর্ট অ্যান্ড এমপাওয়ারিং বাংলাদেশ’।

অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন হুয়াওয়ে বাংলাদেশের সিইও ও হুয়াওয়ে সাউথ এশিয়ার প্রেসিডেন্ট প্যান জুনফেং। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রী এম. এ. মান্নান এমপি; ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার; বিটিআরসি চেয়ারম্যান শ্যাম সুন্দর সিকদার; আইসিটি বিভাগ সচিব মোঃ শামসুল আরেফিন; বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন; এবং চট্টগ্রাম এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান আসিফ ইব্রাহীম। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন টেলিকম অপারেটরগুলোর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, অন্যান্য খাতের স্টেকহোল্ডার ও সহযোগীগণ।

অনুষ্ঠানে প্যান জুনফেং বলেন, “বহু বছর আগে বাংলাদেশের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে যাত্রা শুরু করে হুয়াওয়ে। উদীয়মান অর্থনীতি হিসেবে বিকাশের পথে আমরা সবসময় বাংলাদেশের পাশে ছিলাম। কর্মসংস্থান তৈরি, লিঙ্গসমতা নিশ্চিত করা ও আইসিটি ট্যালেন্ট ইকোসিস্টেমের উন্নয়ন ছাড়াও আমরা গত ২৫ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে এসেছি। সামনের দিনেও এই ধারা অব্যহত থাকবে। আমাদের ওপর অটুট আস্থা রাখায় বাংলাদেশ ও এই দেশের মানুষের প্রতি আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে চাই। অবিশ্বাস্য এই যাত্রায় অনুপ্রাণিত হয়ে আমরা স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে অবদান রাখতে নিরলস কাজ করে যাবো।”

পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী এম. এ. মান্নান, এমপি, বলেন, “আমরা আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদূরপ্রসারী ও বিচক্ষণ নেতৃত্বে আমাদের মানুষের শ্রম ও মেধা কাজে লাগিয়ে উন্নত বাংলাদেশ হওয়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের এ যাত্রায় আমরা চীনের মতো বন্ধুর কাছ থেকে সহায়তা পাচ্ছি। বিশ্ব মানবতার জন্য আমরা এগিয়ে যেতে চাই এবং এজন্য আমাদের উদ্ভাবনী ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োজন। দক্ষিণ এশিয়ার সকল কার্যক্রমের জন্য ঢাকাকে সদর দপ্তর হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্য আমি হুয়াওয়েকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই। আমি হুয়াওয়ের সাফল্য কামনা করছি।”

অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, “স্মার্ট বাংলাদেশে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সংযুক্তি। আমরা ইতোমধ্যে বাংলাদেশের শতকরা ৯৮ ভাগ অঞ্চল ফোরজি নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে পেরেছি। আমাদের ডিজিটাল কানেক্টিভিটির ক্ষেত্রে যে রূপান্তরটা হয়েছে এর পেছনে হুয়াওয়ের অবদান নিঃসন্দেহে প্রশংসার যোগ্য। আমরা সর্বশেষ ফাইভজি চালু করেছি হুয়াওয়ের সহযোগিতায়। আমি এটা বিশ্বাস করি যে, আগামীতে বাংলাদেশে স্মার্ট রূপান্তরের ক্ষেত্রে

হুয়াওয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এবং গত ২৫ বছর ধরে হুয়াওয়ে যেভাবে বাংলাদেশে থেকে বাংলাদেশের জন্য কাজ করেছে আমি এজন্য তাদেরকে অভিনন্দন জানাই।”

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সচিব মো. সামসুল আরেফিন বলেন, “ডিজিটাল অবকাঠামো, অর্থনীতি ও সমাজের বিকাশে হুয়াওয়ের অটল প্রতিশ্রুতি আমরা বাংলাদেশের জন্য যে লক্ষ্য নির্ধারণ করেছি, তার সাথে সম্পূর্ণভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ। ডিজিটাল বাংলাদেশকে স্মার্ট দেশে রূপান্তরের প্রচেষ্টায় আজ আমরা আরেকটি মাইলফলকের দ্বারপ্রান্তে আছি। স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য অর্জনের পথে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে হুয়াওয়ে বিশ্বস্ত সহযোগীর মত অবিচলভাবে কাজ করেছে। পাশাপাশি, বাংলাদেশে আইসিটি ক্ষেত্রে মেধা বিকাশে হুয়াওয়ের অবদান সত্যিকার অর্থেই প্রশংসাযোগ্য।”

‘ইন বাংলাদেশ, ফর বাংলাদেশ’ এই মূলমন্ত্র দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে হুয়াওয়ে ১৯৯৮ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও ডিজিটাল রূপান্তরে যথাসম্ভব অবদান রেখে চলেছে। প্রতিষ্ঠানটি গত ২৫ বছর ধরে আইসিটি ও টেলিযোগাযোগ খাতে বিভিন্ন সেবা ও উদ্ভাবনী সমাধান, আইসিটি দক্ষতা উন্নয়ন, ডিজিটাল বাংলাদেশের জন্য ইকোসিস্টেম বিকাশ ও মানুষের পাশে দাঁড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিয়ে আসছে।

টেলিকম খাতের জন্য টুজি, থ্রিজি ও ফোরজি প্রযুক্তি সহজলভ্য করতে ও ফাইভজি প্রযুক্তির অধিগ্রহণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে হুয়াওয়ে। ২০১৮ সালে দেশ যখন মাত্র ফোরজি যুগে প্রবেশ করেছে তখন প্রতিষ্ঠানটি ফাইভজি ট্রায়াল সম্পন্ন করে। একই সাথে, প্রতিষ্ঠানটি ২০২১ সালে ফাইভজি প্রযুক্তি উন্মোচনের ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রগামী দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে টেলিটককে সহযোগিতা করে। ডিজিটাল বাংলাদেশ মেলা ২০২৩ -এ প্রতিষ্ঠানটি সর্বাধুনিক ৫.৫জি প্রযুক্তি ও এই খাত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ইউজ কেস (ডিজিটাল রূপান্তর) প্রদর্শন করে। এছাড়া, হুয়াওয়ে ফাইবারের মাধ্যমে ১৫ হাজারেরও বেশি বেইজ ট্রান্সসিভার স্টেশনে (বিটিএস) সংযুক্ত করতে সহযোগিতা করেছে।

২০১৮ সালে হুয়াওয়ে বাংলাদেশে ‘ডিজিটাল পাওয়ার’ সেবা দেয়া শুরু করে এবং ময়মনসিংহে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রসহ একাধিক বৃহৎ আকারের আইপিপি এবং রুফটপ সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করেছে। এখন পর্যন্ত, হুয়াওয়ে এর নিজস্ব সরঞ্জামের মাধ্যমে প্রায় ৩৮০ মিলিয়ন ইউনিট নবায়নযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে করতে সাহায্য করেছে যার ফলে ১৮০ হাজার টন কার্বন নিঃসরণ কমেছে, যা ২৫০ হাজার গাছ লাগানোর সমান।

এছাড়া, ফাইন্যান্স, শিক্ষা, গভর্ন্যান্স, স্বাস্থ্য, মিডিয়া, উৎপাদন, পরিবহণ ও অন্যান্য খাতের জন্য সফটওয়্যার, হার্ডওয়্যার ও এআই-নির্ভর ক্লাউড সল্যুশন প্রদান করছে হুয়াওয়ে।

অনুষ্ঠানে স্মার্ট বাংলাদেশের রূপকল্প বাস্তবায়নে নিজেদের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করে হুয়াওয়ে। একই সাথে, পুরোপুরি কানেক্টেড ও ইনটেলিজেন্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ও সমাধান (সল্যুশন) নিশ্চিত করতে চায় প্রতিষ্ঠানটি, যেন সবাই নিরাপদ ও কানেক্টেড (সংযুক্ত) থেকে স্মার্ট সোসাইটির সুফল ভোগ করতে পারে।

spot_img
আরও পড়ুন
- Advertisment -spot_img

সর্বাাধিক পঠিত

spot_img